Stepsister; an awesome story

                                                                   

                                                            

                                                                        সৎ বোন



বাবার লাশ দাফন করে বাড়িতে ফিরতেই বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যার আগমন। আজ আমার আনন্দের দিন। কারণ আমার চিরো শত্রুটা আজ মারা গেছে। আমার আজ প্রাণ খুলে হাসার কথা।কিন্তু সামাজিক কারণে সেটা পারছিনা। বড় আপু এসেছে দুলাভাই কে নিয়ে।বড় আপু আজ আর কাউকেই ভয় পাচ্ছেনা।এতদিন যে মানুষ টা আমাদের জন্য গলার কাটা ছিলো সে আজ স্ট্রোক করে মারা গেছে।মানুষ টা মদ গিলতো প্রচুর। মাকে প্রতিদিন মারতো।আমি মায়ের কান্না সহ্য করতে না পেরে কাঁদতাম।আপু অনেক বড় ভাগ্য নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছে। দুলাভাই একটা মার্কেটিং জব করে । বেতন ও অনেক পায়। আপুকে বেশ সুখেই রেখেছে। দুলাভাই আমাকেও বারবার এই নরক থেকে নিয়ে যেতে চাইতো। কিন্তু আমি যেতাম না।অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে মা একদিন সবাইকে ছেড়ে অভিমান করে বিষ খেয়ে মারা গিয়েছিলো। সেদিন আমি খুব কেঁদেছিলাম।আমি তখন এসএসসি পরিক্ষা দিচ্ছিলাম। জগৎ সংসারে আমার আর আপন কেউ নেই।বাবার উপর প্রচন্ড ঘৃণা চাপছিলো সময়ে সময়ে । ঘৃণা টা আরো বেশী জোড়ালো হলো যখন বৃদ্ধ বয়সে বাবা আরেকবার বিয়ে করলো। কবে কার সৎ মা ভাল হয়েছে আমার জানা নেই। আমার সৎ মা তো প্রথম দিন এসেই ঘোষণা দিলেন যেন আমি তাকে বিরক্ত না করি।
ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছিলো সময়।আমি ইন্টারের পরিক্ষা দিয়ে রেজাল্টের অপেক্ষা করছি।এদিকে আমার সৎ মায়ের একটা মেয়ে হয়েছে।খুবই সুন্দরী।হয়তো আমার সৎ মা ছোটবেলায় সুন্দরী ছিলেন। পিচ্ছিটার দিকে তাকালে মন টা ভাল হতো।কিন্তু সে তো আমার শত্রুর জাত শত্রু।তাই ওকে আদর করার চিন্তা মাথায় আসতোনা।আমার সৎ মা অবশ্য ওর কাছে আমাকে ঘেষতেই দিতেন না।ওঁ সন্দেহ করতেন যেন আমি পিচ্ছিটার কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করবো। কষ্টে মরে যেতে ইচ্ছা করছিলো।কিন্তু আমি পারলাম না। আমাকে বেঁচে থাকতেই হবে। 
আজ আমার খুশির দিন।আমার চিরো শত্রুটা মরে গেছে।আমি এখন অনার্স ফাইনাল ইয়ার।তানিয়া আপু আমাকে নিতে এসেছে।এই বাড়িতে থাকলে আমার কোনো ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলো আমার আপু। কিন্তু আমি গেলাম না।এই বাড়িতে আমার মায়ের স্মৃতি জড়িয়ে আছে। আপু জানালো এরপর যখন আসবে তখন সম্পত্তিগুলোর ব্যবস্থা করে যাবে। আমি কিছুই বললাম না। সম্পত্তির ব্যপারে আমার কোনো আগ্রহ নেই। 
আমার সৎ মা হঠাৎ পরিবর্তন হলো। যে মানুষ টা আমাকে দেখলে চিৎকার করতো বাবা মারা যাবার পর সেই মানুষ টা বড্ড উদাসী হয়ে গেলো। তার মেয়েটার বয়স ৪বছর। তিতলি কে দেখলে মায়া হয়।
আমি যেমন বাবার আদর পাইনি তিতলিও বাবার আদর পাওয়ার আগেই বাবাকে হারালো। তাতে অবশ্য আমার কিছু যায় আসেনা। তিতলি থেকে শুরু করে ওর মা ও আমার শত্রু। 
আজ তিতলির বয়স আট পার হচ্ছে। এমএ পাশ করার পর আমি একটা কোম্পানিতে চাকরী করছি।আমাদের জেলা শহরেই আমার চাকরী। প্রতিদিন সকালে যাই ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়।আমার বড় আপু ঘটক লাগিয়েছেন মেয়ে দেখার জন্য। অবশ্য আমার বিয়েতে আগ্রহ নেই। কোনো জিনিসের উপর আমার মায়া জমেনা। 
আজ বৃহস্পতিবার।আগামীকাল অফিস বন্ধ তাই বিছানায় শুয়ে সিগারেট টানতেছি। সিগারেটের একটা বদভ্যাস হয়ে যাচ্ছে। অবশ্য নেশা হিসেবে রপ্ত হয়নি।ভাল লাগে তাই এক প্যাকেট কিনে রাখি। রাতে দুই তিন টা খেলেই চলে । আর শুক্রবার সারাদিনে পাঁচ টার বেশি যায়। আজও সিগারেট টানতেছি।হঠাৎ মনে হলো কে যেন কোঁকাচ্ছে। প্রথমে পাত্তা দিলাম না। কিন্তু কোঁকানির। শব্দ টা জোড়ালো হচ্ছে। বুঝলাম পাশের ঘরে আমার সৎ মা কোঁকাচ্ছে। আমার আনন্দ হওয়ার কথা। কিন্তু কেন জানিনা কলিজা টা মোচড় দিয়ে উঠলো।তিতলির একটা কথা আমার হৃদয় টাকে ক্ষত বিক্ষত করছে।তিতলি বারবার বলছেঃমা আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবোনা। তোমার কিছু হবেনা। আমি তোমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবো মা। 
তিতলি বার বার এই কথাগুলো বলছে।
নিজের বিবেকে আর সইছিলো না । পাশের রুমে গেলাম। তিতলি ওর মায়ের মাথায় পানিপট্টি দিচ্ছে। আমাকে দেখে মহিলা ওঠার বৃথা চেষ্টা করলেন। কিন্তু শরীর দূর্বল বিধায় উঠতে পারলাম না।কপালে হাত দিয়ে দেখলাম প্রচন্ড জ্বর।
হাসপাতালে ফোন করে এম্বুলেন্স ডাকলাম। পনেরো মিনিটের মাথায় এম্বুলেন্স আসলো।আমার সৎ মাকে এম্বুলেন্সে তুলে তিতলিকে নিয়ে উঠলাম। তিতলি আমাকে জড়িয়ে ধরে আছে। একটা বাচ্চা মেয়ের শরীরের ঘ্রাণ এত সুন্দর হয় আমার জানা ছিলোনা। মেয়েটা কেঁদেই যাচ্ছে। হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নেয়া হলো মহিলাকে। মুখে অক্সিজেন মাস্ক পড়ানো হলো। ডাক্তার জানালো ভয়ের কিছু নেই।রেস্ট নিলে ঠিক হবে। শুক্রবার সারাদিন হাসপাতালে থাকার পর সন্ধ্যায় মহিলাকে নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। 
রুমে এসে ভাবলাম যেটা করলাম সেটা কি ঠিক হলো?যে মানুষ টা আমার চোখের বিষ আমি কেন তাকে বাঁচানোর জন্য এত চেষ্টা করছি?
কিন্তু কোনো জবাব পাচ্ছিনা। মন বার বার বলছে জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর। 
তিতলি আমার রুমে ঢুকলো। জীবনে প্রথমবার সে আমার রুমে এলো।হাতে টোস্ট বিস্কুট আর চায়ের কাপ ট্রেতে করে নিয়ে আসছে।
-মা তোমার জন্য পাঠিয়েছে ভাইয়া। 
তিতলির মুখে ভাইয়া ডাক শুনে ভিতর টা কেঁপে উঠলো। বারবার মনে হচ্ছিলো কোনো একটার অভাব পুর্ণ হলো। 
-কি বললি?ভাইয়া?
-ভাইয়া বললাম বলে রাগ করলে নাকি?
-পাগলি বুড়ি।আমি তোর উপর রাগ করতে পারি?আরেকবার ভাইয়া বলে ডাক।। শুধু আরেকবার ডাক।। 
-ভাইয়ায়ায়ায়া
সহ্য করতে পারলাম না । যাকে জীবনের কাটা মনে করেছিলাম তাকে আজ বিনা ঘৃণায় কোলে তুলে নিলাম। ওর গাল দুইটা চুমু দিয়েই লাল করে দিলাম। পিচ্ছিটা কেঁদেই যাচ্ছে। ওকে কোলে নিয়েই পাশের রুমে এলাম। তিতলির আম্মু আমার দিকে তাকিয়ে আছে অবাক বিষ্ময়ে। 
-কিছু মনে করবেন না।আপনার মেয়ে আমাকে ভাইয়া ডেকেছে। তাই আপনার যদি কোনো আপত্তি না থাকে তবে আমি ওকে কিছুদিন ভাইয়ের স্নেহ দিতে চাই। 
মহিলা আমার দিকে করুণ সুরে তাকাচ্ছেন। তার বয়স আমার চেয়ে অবশ্য বেশী না । খুব বড় জোর দুই তিন বছরের বড়। কিন্তু তাকে আজ মা বলে মনে হচ্ছে।
-আমি কিছুই মনে করিনি। তোমরা যদি ভাইবোন হিসেবে থাকতে পারো তবে আমার আপত্তি কিসের? আমি আর কয়দিন বাঁচবো?
-না মা।আপনার কিছু হবেনা। আমি আপনার কিছু হতে দিবোনা। তিতলি আর আমার মা হয়েই আপনাকে বাঁচতে হবে।
-কি বললে?একবার মা বলে ডাকো প্লিজ। 
-আমার তো মা নেই। আপনি নাহয় আজ থেকে আমার মা হবেন। কি পারবেন না?
-পারবোরে বাবা।তোর মতো সন্তানের মা হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবতী মনে হচ্ছে। আমাকে মাফ করে দিস বাবা। তোকে কোনোদিন আদর করতে পারিনি। আমি সত্যি লজ্জিত।
-মা এইভাবে বলবেন না প্লিজ।আমার অমঙ্গল হয়। 
-তুই তিতলিকে নিয়ে বস আমি রান্না করছি। 
-আচ্ছা।
মা রান্না চড়াচ্ছেন আমি আমার রুমে এলাম। আমার কোম্পানীর ম্যানেজার কে ফোন করে এক সপ্তাহের ছুটি নিলাম । 
তিন জনে শান্তি করে ভাত খেলাম। আমার মনে হলো জীবনেও এমন শান্তি পাইনি।। খাওয়া দাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লাম। 
সকালে তানিয়া আপুকে ফোন করে জানালাম আমি আসতেছি সাথে আরো দুই জন। 
তানিয়া আপুর বাসায় কখনো যাইনি । ওর একটা পিচ্ছি মেয়ে আছে। চার বছর বয়স। 
মা আর তিতলি কে তৈরী হতে বললাম। আজ আমরা তানিয়ার বাড়ি যাবো । মা আমার দিকে ইতস্ততভাবে তাকাচ্ছে। বুঝলাম হয়তো বেড়ানোর মতো পোষাক নাই। আমি আসছি বলেই বের হলাম।
তানভীরের সাথে দেখা হলো । তানভীর আমার ক্লাস মেট।একটা ব্যাংকে চাকরী করছে। ছুটিতে এসেছে বাড়িতে । ওর বাইক টা নিলাম।শপিং করতে হবে। মায়ের জন্য শাড়ি নিলাম দুইটা। তিতলির জন্য থ্রি পিস দুইটা। তিতলির সাজানোর জন্য যাবতীয় কসমেটিক্স সরঞ্জাম নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।
বিকেলে তিন জনে বাইকে উঠলাম। চাকরীর সুবাদে বাইক চালানোতে আমি এক্সপার্ট। তিতলি মধ্যখানে আর মা পিছনে । বাইক স্লো মোশনে চালাচ্ছিলাম মায়ের জন্য। মহিলা জীবনেও গাড়িতে চড়েনি। তিতলি অবশ্য আমাকে ফিসফিস করে বলছিলো বাইক জোড়ে চালাতে। আমি মনে মনে হাসছিলাম। তানিয়ার বাড়ি পৌঁছতেই সে দৌড়ে এলো। বাজার থেকে আনা মিষ্টির প্যাকেট ওর হাতে দিলাম। তানিয়া হয়তো ভাবতে পারেনি আমি তিতলি আর তিতলির আম্মুকে নিয়ে আসবো।হাসি মুখে আমাদের কে বরণ করে নিলো। কোরমা পোলাও গরুর মাংস- বুটের ডাল- দেশী মুরগীর রান-মাছ ভাজা- সেদ্ধ ডিম -সালাদ দিয়ে পেট পুরে খেয়ে নিলাম। খাওয়ার পর ফ্যান ছেড়ে দিয়ে আমি শুয়ে পড়লাম। দুলাভাই আমাদের সবার খোঁজ নিলেন। কেমন চলছে দিন কাল আর সামনে কি কি প্লান এই ব্যপারে আলাপ হলো।দুলাভাই পাশের রুমে গিয়ে তানিয়া আপুর সাথে কথা বলছে । আমি হয়তো অন্য ভাবনায় ছিলাম। তিতলি আর ওর। আম্মু মন খারাপ করে আছে। আমি কিছু বোঝার চেষ্টা করছিলাম । পাশের রুম থেকে অস্পষ্ট শব্দ আসছে।কান পাততে গিয়ে যা শুনলাম সেটা অবিশ্বাস্য।
আমার দুলাভাই তানিয়া আপুকে বলছেঃতুমি না বলতে তোমাদের গলার কাটা ঐ মহিলা আর তার মেয়ে । তোমার বাবার পাঁচ একর জমিতে তাদের কোনো অধিকার নেই। তুমি আর তোমার ভাইয়ের জমি সেগুলো । তুমি না বলতে তুমি তোমার ভাইয়ের কাছে বললেই সে তোমাকে তার ভাগের জমি লিখে দিবে?আজ দেখো তোমার গলার কাটা তোমার ঐ সৎ মা আর সৎ বোন কে নিয়ে সুখে আছে তোমার ভাই।
আপু মিন মিন স্বরে বলতে লাগলোঃকে জানে কি কারণে ঐ মহিলা আমার ভাই কে বশ করলো। নিশ্চয়ই তাবিজ করেছে আমার ভাইকে। আমার ভাই কে আলাদা ভাবে বলতে হবে।
কথাগুলো শোনার পর ঘৃণা হচ্ছিলো তানিয়ার উপর। মানুষ এত স্বার্থপর হতে পারে?তানিয়াকে ডাকলাম।তানিয়া এসে বললোঃ নিলাভ খাওয়া দাওয়া ভাল হয়েছে তো?
-তুই আমাদের সবাইকে কেন বিষ খাওয়ালি না আপু?
-এসব কি বলছিস?আমি তো কিছুই বুঝতেছিনা।
-তোর অভিনয় বন্ধ কর। কাল গিয়ে তোর ভাগের সম্পত্তি নিয়ে আসিস। আর কোনোদিন তোর মুখ যেন আমাকে দেখতে না হয়। চলি
তিতলি আর মাকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে রাত অনেক হলো। মাকে বললাম তানিয়ার কথা ভুলে যেতে। আমরা আমাদের নতুন জীবন সাজাবো । যেখানে কোনো স্বার্থপর মানুষ থাকবে না।
**আজ তিতলির বিয়ে। আমি আর শিপ্রা আত্মীয় সামলাতে ব্যস্ত। শিপ্রা আমার বৌয়ের নাম।শিপ্রাকে বাসর রাতে সব কথা বলেছি। তিতলি আর মাকে যেন নিজের বাড়ির মানুষ মনে করে। শিপ্রা অবশ্য মাথা নাড়িয়ে হ্যা বলেছিলো । গত বারো বছরে শিপ্রা একদিনও কারো অবাধ্য হয়নি। তিতলি ওর ভাবীকে বন্ধু হিসেবে পেয়েছিলো । তানিয়াকে সম্পত্তির ভাগ দিয়েছিলাম। সে তার ভাগের জমি বিক্রি করে গেছে রহিম চাচার কাছে।পরে অবশ্য রহিম চাচার কাছে আমি জমিগুলো কিনে নিয়েছিলাম। আত্মীয় সামলাতে হিমসিম খাচ্ছিলাম। আমার ছেলে আবির ওর ফুফুর সাথে আড্ডা দিচ্ছে।শিপ্রার বাড়ি থেকে সবাই এসেছে।তিতলির নানু বাড়ি থেকেও অনেকেই এসেছে। আমার বন্ধুরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মেহমানদারি তে।অতিথিরা বিদায় নিলো। বরযাত্রীরা একে একে গাড়িতে উঠলো। তিতলি একটাও কথা বলেনি আমার সাথে। শিপ্রা জানালো তিতলি খুব কেঁদেছে। তিতলির স্বামী হাই স্কুলের মাষ্টার।তিতলি গাড়িতে বসে আছে। আমি বিদায় জানাতে গেলাম। আমার গলা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো। 
-পাগলি মেয়ে।কাঁদছে দেখো বুরি গুলোর মতো। ওরে বাপরে কাঁদলে তো আমার বুড়ি কে দারুন দেখায়। আমার পাগলি বোন টা কাঁদছে কেন?বিয়ে হলেই কি ভাই বোন পর হয় নাকি রে পাগলি?
-ভাইয়া আমি তোমাদের ছাড়া বাঁচবোনা । আমাকে কথা দাও ভাইয়া আমাকে নিতে আসবে। 
-পাগলি বুড়ির কথা শোনো। তোকে ছাড়া আমরাও ভাল থাকবোনারে বোন।অবশ্যই তোকে নিতে আসবো। 
তিতলি চোখের পানি মুছে নিলো। আমি সাকিব কে বললামঃভাই তোমার কাছে আমার কলিজাকে দিলাম। ওকে সুখে রাখিও। ও কিন্তু বড্ড ভাল মেয়ে। 
-আপনি চিন্তা করবেন না ভাইজান। আমি তিতলিকে সুখে রাখবো। আমাদের জন্য দোয়া করবেন। আমাদের মধ্যে যেন ভালবাসার ঘাটতি না হয়। 
বরযাত্রী বিদায় নিয়ে চলে গেলো। মা কিন্তু এখনো কাঁদছে।শিপ্রাকে বললাম মাকে সান্তনা দিতে। 
বাড়িটা কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। একটা মেয়ে সমস্ত বাড়িটা মাতিয়ে রাখতো। অথচ আজ বাড়িটা বড্ড নিরব। তিতলির খুব প্রিয় ছিলো ওর ভাবি। যেদিন আমার বিয়ে হলো তখন তিতলির বয়স দশ বছর। ফুলসজ্জায় তিতলি ওর ভাবীকে গিয়ে বলছিলোঃআচ্ছা ভাবী তুমি কি আজ থেকে ভাইয়াকে কেড়ে নিলে?
শিপ্রা হেসে হেসে তিতলিকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলোঃনারে পাগলি আমি কেড়ে নিতে আসিনি। আমি এসেছি বন্ধন দৃঢ় করতে। তিতলি তখন কি জোড়েই না হেসেছিলো। 
** সত্যি বাড়িটা আজ বড্ড শান্ত। একটা মেয়ের জন্য এত বড় অভাব বোধ হয়নি কখনো।ছোট বোন টাকে বড্ড বেশী ভালবাসি।

..........সমাপ্ত
-সুলতান মাহমুদ

Comments